কর্মক্ষেত্রে দ্রুত উন্নতি করতে চান? মনে রাখুন এই ছোট কয়েকটি টিপস
7 minuteRead
জীবনে সাফল্যের প্রথম ধাপ হল স্বাবলম্বী হওয়া, আর্থিক ভাবে স্বাধীন হয়ে ওঠা। তার ফলে আমরা নিজেদের ছোট-বড় সবরকম স্বপ্নদের সফল করতে সক্ষম হই। কিন্তু শুরুর এই প্রথম পর্যায়টি খুবই কঠিন। যেখানে সাফল্য পাওয়ার চাবিকাঠি হল ধৈর্য্য এবং আত্মবিশ্বাস।
জীবনের প্রথম চাকরি হোক বা বহু জায়গায় কাজ করার পর মনের মত কোনও চাকরি; আমরা তা পাওয়ার পরে ভুলে যাই কিছু সাধারণ ছোট নিয়মদের। যা মেনে চললে চাকরিক্ষেত্রে আপনার নাম আলাদা ভাবে মনে রাখবে প্রত্যেকে। কি সেই নিয়ম আসুন দেখে নিই
নিজেকে ইন্ট্রোডিউস করান:
নতুন চাকরিতে জয়েন করার পর অল্প নার্ভাসনেস থাকাটা খুব স্বাভাবিক। বিভিন্ন রিসার্চও সেই কথা বলে। তবে চেষ্টা করবেন প্রথম দিনেই নিজেকে টিমের বাকিদের সাথে পরিচয় করিয়ে দেওয়ার। প্রথম কয়েক দিনে একজন নতুন এমপ্লয়ীর সাথে দরকারি কথা বিশেষ কিছু না থাকলেও, আপনি নিজে থেকেই আলাপ করুন বাকিদের সঙ্গে। তেমন হলে আপনার ম্যানেজারকে বলুন আলাপ করিয়ে দেওয়ার জন্য। প্রথম আলাপেই যেন বাকিরা আপনার হাসি, স্বতঃস্ফূর্ততা আর এনার্জি দেখে বুঝতে পারেন আপনি কতটা ভালবেসে সেই কোম্পানিতে জয়েন করেছেন।
তবে খেয়াল রাখবেন প্রথম আলাপ(Introduction speech) যেন কখনোই খুব দীর্ঘ বা একঘেয়ে না হয়। আগে থেকে স্ক্রিপ্ট তৈরি করেও রাখতে পারেন। খুব ভাল হয় যদি টিম মেম্বার কয়েকজনের নাম সেই স্পিচের মধ্যে উল্লেখ করেন।
উপযুক্ত সময়ে উপযুক্ত প্রশ্ন করুন:
নতুন চাকরিতে ঢোকার পর সেখানকার রুটিন, নিয়ম বা কাজের সাথে অভ্যস্ত হতে সময় লাগে। তার সাথে প্রচুর প্রশ্ন আসে মনে আর সেটাই স্বাভাবিক। এরকম অনেক কাজ থাকে যা আপনি প্রথমবার করবেন তাই সেগুলি নিয়ে কনফিউশন থাকে। কিছু না বুঝতে পারলে অবশ্যই প্রশ্ন করুন তবে খেয়াল রাখবেন সেই প্রশ্ন এবং প্রশ্ন করার সময়টি যেন উপযুক্ত হয়। এমন প্রশ্ন করবেন না যার সমাধান একটু খেয়াল করলেই পাওয়া যাবে।
কোনও বিষয়ে কাজ করতে সমস্যা হলে সেই বিষয়ের নির্দিষ্ট টিম বা ম্যানেজারকে জানান। এই জানানো মানে তাদের ডেস্কে গিয়ে বারবার প্রশ্ন করা নয়। গুগল ক্যালেন্ডারে মিটিং ঠিক করে সেখানে প্রশ্নগুলি লিখে ফেলুন। তাহলে আগে থেকে তারাও উত্তর দেওয়ার জন্য প্রিপারেশন নিতে পারবেন। আর প্রফেশনাল হিসেবে আপনার প্রতি আলাদা একটা বিশ্বাস তৈরি হবে।
নতুন বন্ধু তৈরি করুন:
প্রথম দিনে নিজেকে ইন্ট্রোডিউস করানোর পর চেষ্টা করুন নতুন বন্ধু তৈরি করতে৷ আপনার পাশের ডেস্কে যিনি বসেন বা আপনারই মত কেউ নতুন জয়েন করেছেন সেরকম কারুর সাথে আলাপ করুন, একসাথে কফি খান, কাছাকাছি বাড়ি হলে যাতায়াতও একইসাথে করুন। তাহলে কাজের জায়গায় অনেক বেশি আত্মবিশ্বাস আসবে।
একটা কথা মনে রাখবেন এই বন্ধুত্ব কিন্তু সর্বদা ঘনিষ্ঠ বন্ধু বা প্রিয় বন্ধু হবে না। কারন সবাই কাজ করতে আসছেন আপনার মতই। সুতরাং কলিগের থেকে স্কুলের বন্ধুত্ব এক্সপেক্ট করবেন না।
আপনি আগে যেখানে জব করতেন সেখানকার রুটিন নতুন অফিসে একদমই ফলো করবেন না। আর যদি ফ্রেশার্স হন তাহলে অবশ্যই একটি রুটিন বানান। প্রতিদিনের কাজ সময় ধরে মেইনটেন করুন। চেষ্টা করুন কম সময়ে সাবলীলভাবে কোনও কাজ শেষ করার। আজকের কাজ কালকের জন্য ভুল করেও ফেলে রাখবেন না। সেক্ষেত্রে নিজের সামর্থ্য বুঝে কাজের দায়িত্ব নিন। গুগল ডকসে অর্গানাইজড ভাবে সবকিছু লিখে রাখুন যাতে কোনও কিছু মিস না হয়ে যায়। এর ফলে আপনার ম্যানেজার বা কলিগদের কাছে আপনি শ্রদ্ধার পাত্র হয়ে উঠবেন।
নম্র এবং খোলা মনের মানুষ হয়ে উঠুন:
মনে রাখবেন দুভাবে কোনও কাজ করানো যায়- ধমকে আর ভাল কথায়। দুটি ক্ষেত্রেই কাজ হয়ে যায় তবে ভাল কথার ফল হয় সুদূরপ্রসারী। হতে পারে আপনি খুব কাজ নিয়ে প্যাশনেট বা পারফেক্টশনিস্ট কিন্তু আপনার টিম মেম্বার তা নয়। সেক্ষেত্রে তাকে খারাপ কথা বলে ফেলবেন না। তাকে শান্ত হয়ে আপনার পয়েন্টগুলি বোঝান। নিজেদের মধ্যে একটা ভরসার বন্ডিং তৈরি হবে যা টিমওয়ার্কে খুব সাহায্য করবে।
আবার তেমনই আপনার কোনও কাজ বা প্রেজেন্টেশনে কেউ খুঁত বের করলে তার ওপর চোটপাট না করে, সেই ভুল মন দিয়ে দেখে ঠিক করে নিন। কর্মক্ষেত্রে খোলা মনের মানুষ হওয়াটা খুব খুব প্রয়োজনীয়।
নিজের গুরুত্ব বোঝান:
বেশিরভাগ এমপ্লয়ি নিজের প্রতিদিনের কাজটুকু করে বাড়ি চলে যায়। তারপর আশা রাখে তাদের প্রমোশন হবে বা স্যালারি বাড়বে। ঘটনা হল কোম্পানি তাদেরকেই সম্মান দেয় যারা কোম্পানির কাজে যে কোনও রকম ভ্যালু অ্যাড করতে পারে অর্থাৎ তাদের কাজের জন্য কোম্পানির উন্নতি হয়। সেই জন্য ওভারটাইম করার কোনও প্রয়োজন নেই, অফিসে মাঝরাত অব্দি থাকারও দরকার নেই। নিজের কাজের সময়টুকুর মধ্যেই নিজের গুরুত্ব বোঝানো যায়। তার জন্য সবার আগে নিজের কাজ সম্বন্ধে পরিষ্কার ধারণা থাকা দরকার৷
মোটামুটি এই কয়েকটি ছোট বিষয় খেয়াল রাখলেই কর্মক্ষেত্রে কম সময়ে দ্রুত উন্নতি করতে পারবেন। জব মানে কোনও হাতি-ঘোড়া ব্যাপার নয় যে সবসময় তা নিয়ে চিন্তা বা ভয় পেতে হবে। এটি আপনার জীবনের একটা অংশমাত্র, পুরো জীবন নয়। তাই কাজের পর বাকি সময়টা নিজেকে এবং পরিবারকে অবশ্যই দেবেন। তাহলে কাজ করতেও আলাদা এনার্জি পাবেন। ধরে নিন এটা হল আমাদের তরফ থেকে আপনার জন্য বোনাস টিপস।
Write, Record and Answer! Consume Unlimited Content! All you need to do is sign in and its absolutely free!
Continue with one click!!By signing up, you agree to our Terms and Conditions and Privacy Policy.


