দুশ্চিন্তা থেকে সহজেই মুক্তি পাওয়ার কয়েকটি টিপস রইল আপনার জন্য

7 minute
Read



Disclaimer This post may contain affiliate links. If you use any of these links to buy something we could earn a commission. We are a reader supported website and we thank you for your patronage.

বর্তমানে দুশ্চিন্তা বা anxiety এক দুরারোগ্য রোগের মত ক্রমশ ছড়িয়ে পড়ছে আমাদের মধ্যে।

কিন্তু আমরা একে গুরুত্ব দিই না একদম। দুশ্চিন্তাও যে ভয়ানক রোগ হতে পারে এই ভাবনা বেশির ভাগ মানুষের মধ্যে নেই। শরীরে সামান্য কেটে গেলেও তার কত যত্ন করি আমরা, মনেরও প্রয়োজন হয় সে যত্নের। মন খুব খারাপ হলে তার চিকিৎসার দরকার শরীরের মতই৷ আসুন জেনে নিই অ্যানক্সাইটি কী এবং কখন হয় আর একে ঠিক করা যায় কিভাবে?

anxiety

অ্যানক্সাইটি কী?

মানুষ যখন কোনও পরিস্থিতিতে প্রচুর চিন্তা করে, ভয় পায়, ওভার রিঅ্যাক্ট করে তাকে আমরা অ্যানক্সাইটি বলি। আর এই ঘটনা বারবার ঘটলে এবং তার থেকে মানুষটি শারীরিক ভাবে অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে অ্যানক্সাইটি ডিসঅর্ডার বলে (anxiety disorder)। সেই অসুস্থতা অনেক সময় মৃত্যু পর্যন্ত ডেকে আনতে পারে। এখন আশা করি বুঝতে পারছেন কেন এত গুরুত্বপূর্ণ এই দুশ্চিন্তা!

anxiety

অ্যানক্সাইটি কমাবেন কিভাবে?

দুশ্চিন্তা আমাদের সবারই কম-বেশি হয়। সেটা খুব স্বাভাবিক ব্যাপার। শুধু প্রতিদিনের জীবনে নিজের মনের দিকে যত্ন নিলেই সেটা ডিসঅর্ডারে চলে যাবে না। প্রতিদিন যেমন নিজের ত্বকের যত্ন নেন, তেমনই নিজের মনের যত্ন নিতে হবে..

নিজেকে সময় দিন:

আপনার সারাদিনের রুটিনে নিজের জন্য সময় কতটুকু থাকে? না আমি পার্লার বা ফেসপ্যাক ব্যবহার করার সময়ের কথা বলছি না। যখন আপনি শুধু নিজেকে ভাল রাখার জন্য কোনও কাজ করেন বা ভাবেন কিছু করব তাকে বলে নিজেকে সময় দেওয়া। যা আপনার একান্ত me time! এই সময় আপনার যা ভাল লাগে তাই করুন। গান শোনা, গল্পের বই পড়া, সাজগোজ করা যা খুশি। ঘুম থেকে উঠে ব্রাশ করার মতই গুরুত্বপূর্ণ এটা মনে রাখবেন।

self love

যোগাসন আর মেডিটেশন করুন:

সারাদিনের মধ্যে মাত্র ৩০ মিনিট যোগব্যায়াম আর মেডিটেশনের জন্য সময় দিন। আপনার মন ভেতর থেকে শান্ত হবে। রক্ত চলাচল আর শ্বাস-প্রশ্বাস নিয়মিত হবে ফলে অহেতুক দুশ্চিন্তা হবে না। অনেক হাল্কা যোগাসন আছে যা সহজেই আপনি করতে পারবেন।

meditation

বর্তমান সময়কে উপভোগ করুন:

অতীতে কি হয় নি আর ভবিষ্যতে কি হতে পারে ভেবে নিজেকে কষ্ট দেবেন না। এই দুটো সময়ের ওপরেই আমাদের হাত নেই। তাই শুধু শুধু দুশ্চিন্তা করে লাভ আছে? আপনি এখন যেমন আছেন বা যা করছেন সেটা উপভোগ করুন। বর্তমান সময়তে খুব আনন্দ করুন। সেটা অতীত হয়ে গেলে যাতে কষ্ট না পেতে হয়।

ছোট ছোট খুশি খুঁজে নিন:

এরকম হয়েই থাকে যে আমরা যা চাই সেটা পাই না। অ্যানক্সাইটি এই বারবার না পাওয়ার আঘাতে আরো বেশি করে আসে। আমরা যদি নিজেদের চারপাশে ছোট ছোট মুহূর্তদের মধ্যে ভাল থাকতে শিখি, আনন্দ পেতে শিখি তাহলে অনেক স্ট্রেস কমে যাবে। আজ থেকে খুব ছোট ঘটনার মধ্যে নিজেদের খুশিকে খুঁজুন, সত্যি ভাল থাকবেন।

beach person

সমস্যাদের চিহ্নিত করুন:

"আমার জীবনে অনেক সমস্যা। তুমি কী বুঝবে?" এই কথাটা হয়ত আপনি সবাইকে বলেন কিন্তু সেই সমস্যাগুলো ঠিক কি সেটা কি আপনি জানেন? অ্যানক্সাইটি ডিসঅর্ডারে অনেকবার এরকম দেখা গেছে মানুষ যে বিষয়ে চিন্তা করছেন আসলে সেটার সমাধান খুব সহজেই সম্ভব। তিনি কখনও সমাধানের কথা ভাবেন নি বা সমস্যাটিকে ভাল করে বোঝেন নি, শুধু দুশ্চিন্তাই করে নিজেকে ক্ষতিগ্রস্ত করে তুলেছেন। এই সিচুয়েশনে না পড়তে চাইলে আগে সমস্যাকে চিহ্নিত করুন। যদি সত্যি আপনার পক্ষে সেটি সমাধান করা সম্ভব না হয়ে থাকে তাহলে প্রিয় মানুষদের সাহায্য নিন। দেখবেন অনেক কিছু সহজ হয়ে যাবে।

দুশ্চিন্তা ভাগ করে নিন:

অ্যানক্সাইটির আর এক অন্যতম খারাপ দিক হল লোকে কি ভাববে তা ভেবে নিজের সমস্যাকে কারুর সাথে শেয়ার না করা৷ কাছের মানুষদের বিব্রত করতে না চাওয়ার জন্য আপনি আপনার মনের দুশ্চিন্তাকে ভাগ করে নেন না বেশির ভাগ সময়তেই। কিন্তু সমীক্ষায় দেখা গেছে পরিবার বা প্রিয় বন্ধুদের সাথে নিজের দুশ্চিন্তা শেয়ার করে নিলে মনের দিক থেকে সেই মানুষ অনেক হালকা থাকেন। তাই যাকে সব কথা শেয়ার করা যায় তেমন মানুষকে আজই নিজের দুশ্চিন্তার কথা বলুন। বিশ্বাস করুন আপনাকে তিনি ঠিক বুঝবেন।

reading book and sharing thoughts

পরিমাণমত ঘুম:

এইটা খুব ইম্পর্ট্যান্ট একটা বিষয়। বর্তমানে আমাদের জীবনযাত্রায় ঘুমের সময়টা খুব গড়বড় করে। আমরা অনেক রাত অব্দি জেগে থাকি এফিকে কাজ, পড়াশোনা বা সংসারের চাপে উঠতে হয় পরিমাণমত ঘুম শেষ হওয়ার আগেই। আস্তে আস্তে এই না ঘুমোনোর ক্লান্তি থেকেই আসে ল্যাথার্জি বা বাঙালির ভাষায় ল্যাদ। অ্যানক্সাইটির পেশেন্টেদের জন্য এটা খুব সিরিয়াস একটা বিষয়। রাত জেগে দুশ্চিন্তা করলে তা বাড়তে বাড়তে অনেক সময় সুইসাইডাল হয়ে পড়ে। তাহলে বুঝছেন তো কতটা ভয়ানক সঠিক সময়মত না ঘুমনো।

sound sleep

ডাক্তারের পরামর্শ নিন:

২০২২ সালেও অনেকে সাইকিয়াট্রিস্ট দেখানোর জন্য দ্বিধাবোধ করেন। যারা কনসাল্ট করেন তাদের দিকে অনেকেই বাঁকা চোখে তাকান। সেই সব চোখ আর দ্বিধাকে ঝেড়ে ফেলে আধুনিক মনস্ক হয়ে উঠুন। শরীরের সমস্যা হলে যেমন ডাক্তারের কাছে যান তেমনই এ ক্ষেত্রেও যান। ডাক্তারের কাছে খুলে বলুন সমস্যা। দেখবেন খুব সহজেই আপনি সেরে উঠবেন।

open communication

বর্তমানে ডিপ্রেশন বা অ্যানক্সাইটি একটা গভীর সমস্যা। বিশেষত মেয়েদের জন্য আরোই কারন তারা শেয়ার করতে পারেন না অনেক সময়। একা একা থাকবেন না। বন্ধু তৈরি করুন, নিজেদের প্যাশানকে সময় দিন। বাইরে বেড়িয়ে আনন্দ করুন। পৃথিবী কত সুন্দর তা অনুভব করুন। দেখবেন খুব ভালো আছেন।

self care is not selfish

Logged in user's profile picture




উদ্বেগ এবং চাপ পরিচালনা করার টিপস
<ol> <li>নিজেকে সময় দিন</li> <li>যোগাসন আর মেডিটেশন করুন</li> <li>বর্তমান সময়কে উপভোগ করুন</li> <li>ছোট ছোট খুশি খুঁজে নিন</li> <li>সমস্যাদের চিহ্নিত করুন</li> <li>দুশ্চিন্তা ভাগ করে নিন</li> <li>পরিমাণমত ঘুম</li> <li>ডাক্তারের পরামর্শ নিন</li> </ol>
উদ্বেগের 3 উপসর্গ
বর্তমানে ডিপ্রেশন বা অ্যানক্সাইটি একটা গভীর সমস্যা। বিশেষত মেয়েদের জন্য আরোই কারন তারা শেয়ার করতে পারেন না অনেক সময়। একা একা থাকবেন না। বন্ধু তৈরি করুন, নিজেদের প্যাশানকে সময় দিন। বাইরে বেড়িয়ে আনন্দ করুন। পৃথিবী কত সুন্দর তা অনুভব করুন। দেখবেন খুব ভালো আছেন।